অসুস্থ ছেলের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন মা
নিজস্ব প্রতিবেদন, অর্শরোগে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিল সন্তান, চিকিৎসাও চলছিল। অস্ত্রোপচার হয়েছে দুবার।তারপরেও শেষ রক্ষা হয়নি। বুধবার ফের প্রবল যন্ত্রণা হয়, সেই যন্ত্রনা সহ্য করতে না পাড়ায় তড়িঘড়ি তাকে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় এগরা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর এই মৃত্যুসংবাদ বাড়িতে পৌঁছানোর পর সেই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হলেন তার ৮৫ বছরের বৃদ্ধ মা। ঘটনাটি ঘটেছে বেলদা থানার সাউরির আগরবাড় এলাকায়। মৃত ছেলের নাম রাজকুমার রায় (বয়স ৪৪)।
ঘটনার খবর পেয়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে গোটা এলাকায়। শোকের আবহে তৈরি হয়েছে এলাকার। দীর্ঘদিন ধরে অর্শ রোগে ভুগে অসুস্থ ছিলেন ছেলে। গত মাস খানেক আগে মেদিনীপুরে এক নার্সিংহোমে অস্ত্রোপচার করানো হয় তাঁর। তার পরেও সেই রোগ সারেনি। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় ওড়িষার কটকের এক নার্সিংহোমে। সেখানেও দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপচার করানো হয়। তারপর বাড়ি ফিরে দশ থেকে বারো দিনের মধ্যেই পুনরায় সেই অসুস্থতা বোধ করেন তিনি। বুধবার প্রবল যন্ত্রণা সঙ্গে শ্বাসকষ্টের অসুবিধা হওয়ায় তড়িঘড়ি তাঁকে বাড়ি থেকে পার্শ্ববর্তী পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা সুপার স্পেশালিটি হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। আর এই মৃত্যুসংবাদ বাড়িতে এসে পৌঁছানোর পর শোকে ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকেরা।
এই সংবাদ বেশি করে আঘাত দেয় তার বৃদ্ধ মা আভা রায়কে (বয়স ৮৫)। এরপরে তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বাড়ির পেছনে একটি তেঁতুলগাছের ডালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। ছেলের মৃতদেহ আনতে যখন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা হাসপাতালে পৌঁছায়, তখন বাড়িতে ঘটে যায় এই বিপত্তি। পরপর দুটি মৃত্যুর ঘটনায় শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। পরিবার সূত্রে আরও জানা যায়, গত মাস দুয়েক আগে রাজকুমারের দাদুর মৃত্যু হয়েছে। তার তিন মাস পরে এই ঘটনা। মৃত রাজকুমারের এক ছেলে এক মেয়ে রয়েছে। দু জনেই নাবালক নাবালিকা।একজন সদ্য একাদশ শ্রেণিতে উঠেছে, অপরজন এবারের সপ্তম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ।ফলে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।